Featured
- Get link
- X
- Other Apps
এনএফটি এর আদ্যোপান্ত
এনএফটি নিয়ে বর্তমানে খুব আলোচনা হচ্ছে, আমি এখানে অল্প করে ধারণা দিবো যাতে এনএফটি কি? কেন? কিভাবে? কাজ করে।
শুরুতেই, এনএফটি কী?
এনএফটি পূর্ণরূপ ‘নন-ফাঞ্জেবল টোকন’, অর্থনীতির ভাষায় ‘ফাঞ্জেবল অ্যাসেট’ বলতে এমন কিছু ইউনিটকে বুঝায় যা খুব দ্রুত পরিবর্তন করে নেওয়া সম্ভব – যেমন, টাকা বা অর্থ। আর নন ফাঞ্জেবল মানে অপরিবর্তনীয় । উদাহরণ দিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ধরুন, আপনার হাতে ১০ টাকার একটি নোট রয়েছে। আপনি চাইলেই সেটিকে পাঁচ টাকার দুটি নোটে রূপান্তর করতে পারবেন, বা একটি পাঁচ টাকা আর দুটি দুই টাকা আর একটি এক টাকা করে ভাঙ্গাতে পারবেন। এতে করে মূল্যমান কমবে না। কিন্তু ‘নন-ফাঞ্জেবল’ কোনো কিছুর মাধ্যমে এটি করা অসম্ভব। এর অর্থই হল – এটি এমন অভিনব সম্পদ যা দ্রুত পরিবর্তন করে নেওয়া সম্ভব নয়। এ ধরনের সম্পদ হতে পারে অভিনব কোনো বাড়ি বা মোনালিসা চিত্রকর্মটি। আপনি চাইলে অনুকরণ করে একই রকম আরেকটি তৈরি করে নিতে পারেন, বা চাইলে চিত্রকর্মের ছবি তুলে নিতে পারেন। কিন্তু আসলটির মালিক শুধু একজন-ই হতে পারবেন।
এনএফটি কেন?
এনএফটি হল ডিজিটাল বিশ্বে “এরকম একটিই আছে” ধরনের সম্পদ যা অন্য যে কোনো সম্পদের মতো কেনা যায় বা বিক্রি করা যায়। কিন্তু এর কোনো নিজস্ব বাহ্যিক আকার নেই যেটি ধরা বা ছোঁয়া সম্ভব। এই ডিজিটাল টোকেনকে তুলনা করা যায় অনেকটা ভার্চুয়াল বা বাস্তব বিশ্বের কোনো সম্পদের মালিকানার সনদ হিসেবে। বাংলাদেশে এনএফটি অবৈধ শুধু এনএফটি না বাংলাদেশে এনএফটি, বিটকয়েন, ইথেরিয়াম সব ই অবৈধ, এসবের লেনদেন দণ্ডনীয় অপরাধ।
এনএফটি কীভাবে কাজ করে?
শিল্পকর্মের মতো গতানুগতিক ধারার কাজের মূল্য বেশি, কারণ এরকম একটিই আছে। কিন্তু চাইলেই সেগুলোর ডিজিটাল ফাইল তৈরি করা যায় এবং সেটির যত খুশি তত নকল তৈরি করা যায়। কিন্তু এনএফটি’র সাহায্যে কোনো শিল্পকর্মকে ‘টোকেনাইজড’ করে মালিকানার ডিজিটাল সনদ তৈরি করা যায় যা কেনা যাবে এবং বিক্রি করা যাবে। অন্যদিকে, ক্রিপ্টো-কারেন্সির সাহায্যে কে কোনটা কিনছে তার একটি রেকর্ড থেকে যাচ্ছে ‘ব্লকচেইন’ নামের শেয়ারড একটি খতিয়ানে। চাইলেও রেকর্ড পাল্টে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ ‘ব্লকচেইন’ খতিয়ানটি পরিচালিত হয় বিশ্বের হাজারো কম্পিউটারের মাধ্যমে। এ ছাড়াও এনএফটি’তে ‘স্মার্ট কনট্র্যাক্ট’ বলে একটি বিষয় রয়েছে। এতে করে শিল্পকর্মটির শিল্পী ভবিষ্যতেও তার শিল্পকর্মের বিক্রি থেকে লাভবান হতে পারবেন, যতবার টোকেন বিক্রি হবে ততবার মোট বিক্রয় মূল্যের দশ শতাংশ অংশ পাবেন তিনি। একটা মজার জিনিস হল, এটি নকল করা যায় না, তবে এটি সাধারণ ছবি হিসাবে দেখানো যায় আর এটা যত যত ছড়াবে আসল আর্ট এর দাম ততই বাড়বে। আর এটির ছবি ছড়ালে এনএফটি মালিকের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। এনএফটি টোকেনটি নিশ্চয়তা দিচ্ছে ‘আসল’ কাজটির মালিক শুধু তিনিই, অন্য কেউ নন। গোটা বিষয়টিতে অনেকে ‘স্বাক্ষর করা প্রিন্ট’ বিক্রির সঙ্গে তুলনা করছেন।
যে কেউ নিজ কাজকে এনএফটি হিসেবে বিক্রি করার জন্য ‘টোকেনাইজ’ করতে পারে। আপনিও পারবেন। বিশেষ কিছু উদাহরণ দিলে বুঝবেন কেমন ধরণের এনএফটি হয়।
১। ফেব্রুয়ারির ১৯ তারিখে অ্যানিমেটেড জিফ ‘নিয়ান ক্যাট’ বিক্রি হয়েছে পাঁচ লাখ ডলারেরও বেশি মূল্যে। এর বিশেষত্ব হল, ২০১১ সালে এক মিমে ‘উড়ুক্কু পপ-টার্ট বিড়াল’ হিসেবে ওই অ্যানিমেটেড জিফ ব্যবহার হয়েছিল।
২। সঙ্গীতশিল্পী গ্রাইমস নিজের কিছু ডিজিটাল শিল্প বিক্রি করেন ৬০ লাখ ডলারেরও বেশি মূল্যে।
৩। টুইটার সহ-প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি টুইটারের প্রথম টুইটটি এনফটি হিসেবে নিলামে তোলেন। নিলামে দর গিয়ে ঠেকেছিল দুই কোটি ৫০ লাখ ডলারের ঘরে।
৪। অনলাইন গেম ও এনএফটি আকারে বিক্রি হচ্ছে।
হয়তো বুজেছে এনএফটি বিশাল ক্ষেত্র আছে এনালগ আর্ট থেকে ডিজিটাল আর্টে কনভার্ট করা। শুধু আর্ট না, সঙ্গীত, গেমস, 3D মডেল, আরও অনেক কিছু। আশা করবো অদুর ভবিষ্যতে বাংলাদেশেও এর প্রচলন ঘটবে। এবং হাজারও ডিজিটাল শিল্পী এখান থেকে অনেক উপার্জন করতে পারবে।
Popular Posts
What's your imagination, has become your limitation.
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment